Q. জনন তন্ত্র কাকে বলে ?
কুনোব্যাঙের পুংজননতন্ত্র
কুনোব্যাং একলিঙ্গ প্রাণী।
এর পুং-জননতন্ত্র যেসব অঙ্গ নিয়ে গঠিত সেগুলি হল— 1. একজোড়া 2. শুক্রাশয়, 3. একজোড়া রেচন-জনননালি, 3. একটি রেচন-জননছিদ্র, 4. একটি অবসারণী, 5. একটি অবসারণী ছিদ্র, 6. বিডার্স অঙ্গ এবং 7. ফ্যাটবডি।
1. শুক্রাশয় : কুনোব্যাঙের প্রতিটি শুক্রাশয় বৃক্কের অঙ্কদেশে যুক্ত থাকে। শুক্রাশয় লম্বাটে এবং হালকা হলুদ রঙের হয়। প্রতিটি শুক্রাশয় দুটি বা তিনটি খণ্ডে বিভক্ত।
শুক্রাশয়ে শুক্র উৎপাদক নালিকার মধ্যে শুক্রাণু উৎপাদিত হয়। শুক্র উৎপাদক নালিকাগুলি ভাসা ইফারেনসিয়া নামক সরু সরু নালির সাহায্যে রেচন-জনননালির সঙ্গে যুক্ত থাকে।
ভাসা ইফারেনসিয়া গবিনীর সঙ্গে যুক্ত থাকে। শুক্রাণু উৎপাদক নালিকার ভিতরের গায়ে যে আবরণী কলা থাকে, সেখান থেকে শুক্রাণু উৎপন্ন হয়ে ভাসা ইফারেনসিয়া নালির মাধ্যমে গবিনীতে বা রেচন-জনননালিতে আসে।
কাজ: শুক্রাশয় শুক্রাণু উৎপন্ন করে।
2. রেচন-জনননালি বা উলফিয়ান নালি: প্রতিটি বৃক্কের বাইরের কিনারা থেকে একটি নালি বের হয়। একে গবিনী বলে।
পুরুষ ব্যাঙের ক্ষেত্রে গবিনীর মাধ্যমে মূত্র ও শুক্রাণু উভয়েই বাহিত হয় বলে, একে রেচন-জনননালি বা উলফিয়ান নালি বলে।
উলফিয়ান নালি দুটি দেহগহ্বরের শেষভাগে গিয়ে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি সাধারণ রেচন-জনননালি গঠন করে। এই নালিটি অবসারণীতে উন্মুক্ত হয়।
কাজ: মূত্র এবং শুক্রাণু বহন করা।
3. রেচন-জননছিদ্র: ব্যাঙের প্রতিটি উলফিয়ান নালি পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়ে একটি সাধারণ ছিদ্রের মাধ্যমে অবসারণীতে উন্মুক্ত হয়। এই ছিদ্রটিকে রেচন-জননছিদ্র বলে।
কাজ: রেচন-জননছিদ্রের মাধ্যমে মূত্র এবং শুক্রাণু অবসারণীতে যায়।
4. অবসারণী : মলাশয়ের পিছনে যে ছোটো প্রকোষ্ঠটিতে সাধারণ রেচন জনন নালী উন্মুক্ত হয় তাকে অবসারণী বলে।
কাজ: শুক্রাণু অবসারণী দিয়ে অবসারণী ছিদ্রপথে বাইরে নির্গত হয়।
5. অবসারণী ছিদ্র: অবসারণী যে গোলাকার ছিদ্রপথে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয় সেটিই অবসারণী ছিদ্র নামে পরিচিত।
কাজ: শুক্রাণু অবসারণী ছিদ্র দিয়ে বাইরে নির্গত হয়।
6. বিডার্স অঙ্গ: প্রতিটি শুক্রাশয়ের সম্মুখভাগে বৃক্কের নিম্নদেশে একটি ছোটো গোলাকার অঙ্গ যুক্ত থাকে। একে বিডার্স অঙ্গ বলে।
প্রতিটি বিডার্স অঙ্গ নয়টি খণ্ড নিয়ে গঠিত।
কাজ: এর সঠিক কাজ জানা যায়নি। কোনো কোনো বিজ্ঞানীর মতে এটি প্রকৃতপক্ষে ক্ষয়প্রাপ্ত ডিম্বাশয়।
7. ফ্যাটবডি : প্রতিটি বৃক্কের ওপরের দিকে আঙুলের মতো লম্বা হলুদ বর্ণের বস্তু দেখা যায়। একে ফ্যাট বড়ি বলে।
কাজ: ফ্যাট বড়ির মধ্যে চর্বি জাতীয় বস্তু জমা থাকে। শীতঘুমের সময় এবং জনন কোশ উৎপাদনের সময় ব্যাং এর থেকে শক্তি পায়।