মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় কেন ব্যাখ্যা করো ?

মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় কেন ?: নীলনদের অবদান: মিশরীয় নীলনদের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

মিশরকে নীলনদের দান বলা হয় কেন ?

(1) মরুভূমির গ্রাস থেকে মুক্তি : মিশরের পূর্বে আরবের মরুভূমি এবং পশ্চিমে সাহারা মরুভূমির প্রসার ঘটেছে। মাঝখান দিয়ে নীলনদ প্রবাহিত হওয়ায় মিশর উষর মরুভূমির গ্রাস থেকে এবং সুজলা সুফলা হয়ে উঠেছে।

(2) কৃষির প্রসার: প্রতি বছর বন্যার ফলে পলি সঞ্চিত হয়ে নীলনদের উভয় তীরের বিস্তীর্ণ উপত্যকা যথেষ্ট উর্বর হয়ে ওঠে। এই উর্বর মাটিতে প্রাচীনকালে কৃষির যথেষ্ট প্রসার ঘটেছে।

(3) সেচের সুবিধা: মিশরে প্রয়ােজনের তুলনায় যথেষ্ট কম বৃষ্টিপাত হয়। এজন্য নীলনদ থেকে খাল কেটে কৃষিজমিতে জলসেচের ব্যবস্থা করে সেখানে কৃষিকাজে উন্নতি ঘটানাে সম্ভব হয়েছে। এর ফলে এখানে মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা সহজ হয়েছে।

(4) শিল্প ও বাণিজ্যের বিকাশ: কৃষির ওপর ভিত্তি করে প্রাচীন কালে মিশরে শিল্প ও বাণিজ্যের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।

(5) অনুকূল জলবায়ু : নীলনদের প্রবাহের ফলে মিশর মরুভূমির রুক্ষ জলবায়ুর প্রভাব থেকে মুক্তি পেয়েছে। নীলনদের প্রভাবে এই অঞলের জলবায়ু মানুষের বাসযােগ্য হয়ে উঠেছে। অনুকূল আবহাওয়ায় এখানকার মানুষ যথেষ্ট পরিশ্রমী ও সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়েছে।

(6) নগর ও বাণিজ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠা: এই অনুকূল জলবায়ুতে নীলনদের উভয় তীরে বিভিন্ন নগর, শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্র গড়ে উঠেছে।

(7) যােগাযােগের সুবিধা: নীলনদ থাকায় মিশরে জলপথে দূরদূরান্তের সঙ্গে যােগাযােগ রক্ষা করা ও পণ্য পরিবহণ করার কাজ খুবই সহজ হয়েছে। এক কথায়, নীলনদ না থাকলে দু- দিকের রুক্ষ মরুভূমি মিশরকে গ্রাস করে নিত এবং মিশরে সভ্যতার বিকাশ সম্ভব হত না।

এজন্য প্রাচীন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরােডােটাস মিশরকে ‘নীলনদের দান’ বলে অভিহিত করেছেন।

Leave a Comment

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.