মনসবদারি প্রথা কে প্রচলন করেছিলেন ? মনসবদারি প্রথা কে কবে প্রবর্তন করেন ? মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্য,
উত্তর : মনসবদারি প্রথা।
ভূমিকা : ১৫৭৩-৭৪ খ্রিস্টাব্দে মােগল সম্রাট আকবর ভারতে মনসবদারি প্রথা প্রচলন করেন।
এই প্রথা অনুসারে প্রতিটি সরকারি কর্মচারীর উপর কিছু না কিছু সামরিক দায়িত্ব ন্যস্ত হয় এবং প্রতিটি কর্মচারী সৈন্যবাহিনীর অন্তর্ভুক্ত হয়।
মনসবদারি প্রথা কে প্রচলন করেছিলেন ?
অর্থ : মনসব’ শব্দটির অর্থ পদমর্যাদা। যিনি এই বিশেষ পদমর্যাদার অধিকারী হতেন তাকে মনসবদার বলা হত।
মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্য
মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্য : মনসবদারি প্রথার বৈশিষ্ট্যগুলি হল নিম্নরূপ-
(১) বিভিন্ন স্তর : আকবরের আমলে মনসবদারদের ৩৩টি স্তর ছিল। সর্বনিম্ন মনসবদারের অধীনে ১০ জন সেনা, সর্বোচ্চ মনসবদারের অধীনে ৫০০০ সেনা এবং ৭ হাজারী, ৮ হাজারী এবং ১০ হাজারী মনসব সাধারণত শাহজাদাদের জন্য নির্দিষ্ট থাকত।
(২) নিয়ােগ পদ্ধতি : পূর্বতন মনসবদারদের পুত্ররা মনসব পাওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতেন। তবে বংশ গৌরবহীন ব্যক্তিও নিজ যােগ্যতা বলে মনসবদার পদে নিযুক্ত হতে পারতেন।
(৩) মনসবদার পদের স্থায়িত্ব : বাদশাহের ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর মনসবদারদের নিয়ােগ, পদোন্নতি, বদলী ও পদচ্যুতি নির্ভর করত।
(৪) বেতন : মনসবদারদের বেতন দুভাবে দেওয়া হত- (i) যে সব মনসবদার নগদ বেতন পেতেন তাদের মনসবদার-ই-নগদী’ বলা হত। আর (ii) যারা বেতনের পরিবর্তে জায়গির পেত তাদের জায়গিরদার’ বলা হত।
মনসবদারি প্রথা প্রসূত সঙ্কট :
(১) মনসবদারি প্রথা সূত্রে সেনাবাহিনী গঠিত হওয়ায় মােগল বাহিনীর মধ্যে সংহতি গড়ে উঠেনি। (২) মনসবদারদের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় জায়গির সঙ্কট দেখা দেয়।
উপসংহার : পরিশেষে উল্লেখ্য, ঔরঙ্গজেব ও তৎপরবর্তী বাদশাহদের দুর্বলতার কারণে মনসবদারি প্রথা গভীর সঙ্কটের সৃষ্টি করে ও মােগল সাম্রাজ্যের পতনের এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ হয়ে কাজ করে।