সিপাহী বিদ্রোহের সময় মুঘল সম্রাট কে ছিলেন ? কে এই বিদ্রোহকে প্রথম জাতীয় সংগ্রাম বলেছেন?এই বিদ্রোহের ব্যর্থতার চারটি কারণ লেখো।
উত্তর : সিপাহি বিদ্রোহের সময় মোগল সম্রাট : সিপাহি বিদ্রোহের সময় মোগল সম্রাট ছিলেন—দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ।
■ প্রথম জাতীয় সংগ্রাম : বিনায়ক দামোদর সাভারকার ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহকে ‘প্রথম জাতীয় সংগ্রাম’ বলে অভিহিত করেছেন।
সিপাহী বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণ ।
■ সিপাহি বিদ্রোহের ব্যর্থতার চারটি কারণ : গোর্খা বাহিনীর সাহায্য নিয়ে মাত্র ৪ (চার) মাসের মধ্যে ব্রিটিশ সরকার মহাবিদ্রোহকে ব্যর্থ করে দেন। এই বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণগুলি নিম্নরূপ—
১. পরিকল্পনার অভাব : মহাবিদ্রোহের ব্যর্থতার এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল সুগঠিত পরিকল্পনার অভাব। লক্ষা ও আনুগত্যের প্রশ্নে বিদ্রোহীদের মধ্যে কোন ঐক্যমত ছিল না। ফলে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে বিদ্রোহ দমন করা সহজসাধ্য হয়।
২. আঞ্চলিক সীমাবদ্ধতা : মহাবিদ্রোহ সমগ্র ভারতে ছড়িয়ে পড়েনি। কয়েকটি নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিল। ফলে বিদ্রোহ দমন করা ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে সহজসাধ্য হয়।
৩. যোগ্য নেতৃত্বের অভাব : সিপাহিদের মধ্যে যোগ্য নেতৃত্বের অভাব বিদ্রোহের ব্যর্থতাকে অনিবার্য করে তুলেছিল।
নানাসাহেব, লক্ষ্মীবাঈ, তাঁতিয়া তোপী প্রভৃতি নেতারা সাহসী ও সমরকুশলী হলেও ইংরেজ সেনাপতি লরেন্দ আউটকামভলক প্রসখের তুলনায় অত্যন্ত নগণা ছিলেন।
৪. পদ্ধতির অভাব : ত্রুটিপূর্ণ রণকৌশল ও সামরিক পদ্ধতি ১৮৫৭-এর বিদ্রোহের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ ।
৫. যোগাযোগের অভাব : রেলপথ, টেলিগ্রাফ ইংরেজ প্রশাসনের অধীনে ছিল। ফলে দ্রুত সংবাদ প্রেরণ ওসৈন্য সমাবেশ করা ইংরেজদের পক্ষে সম্ভব হয়। কিন্তু ভারতীয়দের এই সুযোগ ছিল না।
৬. শিখ ও গোর্খা বাহিনীর ইংরেজ পক্ষ অবলম্বন : শিখ ও গোর্খা বাহিনীর ইংরেজ পক্ষ অবলম্বন ভারতীয় সিপাহীদের বিদ্রোহকে ব্যর্থতায় পর্যবসিত করে।